চাটগাঁইয়া ওয়েবডেক্স: বর্ষবরণের প্রস্তুতি চলার সময় চট্টগ্রামের ডিসি হিলে নববর্ষের অনুষ্ঠান মঞ্চে হামলা চালিয়েছে একদল লোক।
রোববার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে ৪০/৫০ জনের একটি মিছিল নিয়ে এসে মঞ্চ ও আশেপাশের চেয়ারটেবিল ভাঙচুর করতে শুরু করে। সেই সময় তারা যে সব স্লোগান দেয় , তার মূল বক্তব্য ছিল, শেখ হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ডিসি হিলে নববর্ষের কোন অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হবে না।
গত ৪৬ বছর ধরে সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের ব্যানারে এখানে বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হচ্ছে।
কিন্তু ভাঙচুরের এই ঘটনার পর এবার অনুষ্ঠান না করার ঘোষণা দিয়েছে পরিষদ।
চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেছেন, সন্ধ্যার দিকে কিছু লোক এসে মঞ্চ ভাঙচুর করার চেষ্টা করলে আমরা তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করি। এই ঘটনার তদন্ত চলছে।
তবে আয়োজকরা জানিয়েছেন, ওসি ভাঙচুর প্রতিহত করার কথা বললেও ঘটনাস্থলে চেয়ার ও মঞ্চের কাঠামো ভেঙে পড়ে আছে। প্যান্ডেলের কাপড় ও প্যানাফ্ল্যাক্সের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রামের ডিসি হিলে গত ৪৬ বছর ধরে বাংলা নববর্ষ বরণ ও বর্ষ বিদায় উপলক্ষে অনুষ্ঠান করে আসছে। এবার ৪৭তম বারের মতো বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের জন্য গত ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়।
কিন্তু আয়োজকদের সঙ্গে প্রশাসনের সভায় নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে অনুষ্ঠানের অনুমতি ঝুলিয়ে রাখা হয়। এতে অনুষ্ঠান করা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে যান আয়োজকরা। গত ১০ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজক কমিটির সঙ্গে বৈঠকে ডিসি হিলে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে শর্ত দেওয়া হয়, অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলোর গানের তালিকা প্রশাসনকে আগেই দেখাতে হবে। পহেলা বৈশাখের এ অনুষ্ঠান দেখভাল করার জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি তদারকি কমিটিও করে দেওয়া হয়। আয়োজকরা সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান করার অনুমতি চাইলেও তাদের বিকাল ৪টার মধ্যে শেষ করতে বলা হয়। পাশাপাশি ‘বিতর্ক হতে পারে’–এমন কোনও গান বা কবিতা না রাখার অনুরোধ করে প্রশাসন।
পুলিশ জানিয়েছে এই ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে বলে।